প্রিয় পাঠক, তুমি তো জানো, আত্মকথা কিংবা আত্মস্মৃতি সে তো উত্তম পুরুষেই লেখার কথা। মানে এমনটাই হয় সচারাচর। জগতের সব বিখ্যাত মানুষের আত্মজীবনী কিংবা স্মৃতিকথা তো আমি এই করেছি, এমন ছিল আমার দিনরাত্রিরই বয়ান। এই ‘আমি’ বাইরে দাঁড়িয়ে কি নিজেকে প্রকাশ করা যায়? তুমি ভেবে দেখো, নিজের কথা অন্যের মতো করে বলতে পারার একটা বৈপরীত্য আছে, ক‚টাভাষও আছে। কিন্তু এই সব কিছুর চেয়ে বেশি করে নিজের কথা অন্যের নামে বলার মধ্যে তুমি একটা জটিল লেখন প্রক্রিয়া দেখতে পারো। মানে পুরো ব্যাপারটা সৃষ্টিশীল স্মৃতিচারণে রূপ নিতে পারে।
প্রিয় পাঠক, তুমি তো জানো, আত্মকথা কিংবা আত্মস্মৃতি সে তো উত্তম পুরুষেই লেখার কথা। মানে এমনটাই হয় সচারাচর। জগতের সব বিখ্যাত মানুষের আত্মজীবনী কিংবা স্মৃতিকথা তো আমি এই করেছি, এমন ছিল আমার দিনরাত্রিরই বয়ান। এই ‘আমি’ বাইরে দাঁড়িয়ে কি নিজেকে প্রকাশ করা যায়? তুমি ভেবে দেখো, নিজের কথা অন্যের মতো করে বলতে পারার একটা বৈপরীত্য আছে, ক‚টাভাষও আছে। কিন্তু এই সব কিছুর চেয়ে বেশি করে নিজের কথা অন্যের নামে বলার মধ্যে তুমি একটা জটিল লেখন প্রক্রিয়া দেখতে পারো। মানে পুরো ব্যাপারটা সৃষ্টিশীল স্মৃতিচারণে রূপ নিতে পারে।
‘আমি ছেলেবেলায় যে স্কুলে পড়তাম সেটা আমার বাড়ি থেকে বেশ দূরে’ বাক্যটিকে যখন তুমি তৃতীয় পুরুষে লিখছ ‘সে ছেলেবেলায় যে স্কুলে পড়ত সেটা তার বাড়ি থেকে বেশ দূরে’- তখন তোমাকেই যেন তুমি দেখছ একটু দূর থেকে। এই দেখাটার মধ্যে স্মৃতিকাতরতার পাশাপাশি একটা নির্মোহ কী থাকে? নাকি নিজেকে এই অন্য আরেকজনের নামে প্রকাশ করার মধ্যে গল্পের টানটোন থাকে? এইসব প্রশ্নই তোমার মনে আসবে, মানে প্রাসঙ্গিকভাবেই মনে আসতে বাধ্য ‘অতসীর স্কুল’ বইটি পড়তে বসলে।
বইটির সরল নামকরণ থেকেই তুমি বুঝতে পারছ যে, মিলু শামস ‘অতসীর স্কুল’ নামের যে বইটি লিখেছেন সেটি অতসী বলে একটি মেয়ের স্কুলজীবন। মোচড়টা এখানেই দারুণ যে, এই অতসী আদতে স্বয়ং মিলু শামস। মূলত তিনি নিজের স্কুলজীবন আর শৈশবকে বর্ণনা করছেন ‘অতসী’র বয়ানে। কিন্তু শুধু মামাবাড়ি, স্কুল, আম-কাঁঠালের ছায়া, দেবদাম, কিরিটি রায় ছাড়িয়ে অতসী একসময় চলে যায় সোজা নোবেল পুরস্কারের দেশে। ফলে শেষের দিকে এসে তুমি দেখতে পাবে সেই মুলাদী, গৌরনদী, হরিসোনাপুর পার হয়ে অতসী হাজির সুইডেনের গোথেনবার্গ বই উৎসবে। ছোট্ট অতসী এখন পরিণত হয়ে নোবেল মিউজিয়ামে অনুভব করছেন বড় বড় বিজ্ঞানী, লেখকদের হৃৎস্পন্দন। আর সেই হৃৎস্পন্দনের সঙ্গী হয়ে যাবে তুমি, কারণ তুমি পড়তে পড়তে একটা গল্পের ভুবনে চলে যাবে। সত্য, স্মৃতি আর জীবনকথা তোমাকে টেনে নিয়ে যাবে ‘অতসী’ নামের বালিকার দিকে। তোমার হয়তো তখন ‘এলিস’ কিংবা ‘আনা ফ্রাঙ্ক’কে মনে পড়বে। কিন্তু তুমি আরো দূরে এগিয়ে যাবে। কারণ অতসী তোমাকে অনেকটা পথ হাঁটাতে চায়। মিলু শামস অতসীকে তৈরি করেছেন তোমার সঙ্গী করতেই।
নিজেকে ‘অতসী’ চরিত্রে পরিণত করার মুনশিয়ানার সাথে এই বইখানিতে তোমার প্রাপ্তি হবে, ছোট ছোট বাক্য গঠন, ছোট ছোট অধ্যায়। এই সব ছোট ছোট বিন্যাস ধরে তুমি এগোতে থাকবে স্মৃতি-সত্তার দারুণ এক ভ্রমণে। ‘স্মৃতির প্রত্যুষ’, ‘সুগন্ধ ছুঁয়ে যায়’, ‘বিষণ্ণ গন্ধরাজ’, ‘দু’পয়সার আনন্দ’, ‘হিমায়িত ঘুমের রাত’-
ইত্যকার উপশিরোনামগুলো তোমাকে নিয়ে যাবে তোমার শৈশবেও। আর তোমারও মনে চাইবে একদিন ‘নোবেলের শহর’-এ পরিভ্রমণ করতে।
তবে পাঠক বন্ধু আমার, এসো, ‘অতসী’র হাত ধরো। স্মৃতি আর শৈশবের গন্ধ নিয়ে এগোতে শুরু করো দূর বিশ্বের পানে।
শুভেচ্ছা
প্রিয় পাঠক, তুমি তো জানো, আত্মকথা কিংবা আত্মস্মৃতি সে তো উত্তম পুরুষেই লেখার কথা। মানে এমনটাই হয় সচারাচর। জগতের সব বিখ্যাত মানুষের আত্মজীবনী কিংবা স্মৃতিকথা তো আমি এই করেছি, এমন ছিল আমার দিনরাত্রিরই বয়ান। এই ‘আমি’ বাইরে দাঁড়িয়ে কি নিজেকে প্রকাশ করা যায়? তুমি ভেবে দেখো, নিজের কথা অন্যের মতো করে বলতে পারার একটা বৈপরীত্য আছে, ক‚টাভাষও আছে। কিন্তু এই সব কিছুর চেয়ে বেশি করে নিজের কথা অন্যের নামে বলার মধ্যে তুমি একটা জটিল লেখন প্রক্রিয়া দেখতে পারো। মানে পুরো ব্যাপারটা সৃষ্টিশীল স্মৃতিচারণে রূপ নিতে পারে।
By মিলু শামস
Category: গদ্য
প্রিয় পাঠক, তুমি তো জানো, আত্মকথা কিংবা আত্মস্মৃতি সে তো উত্তম পুরুষেই লেখার কথা। মানে এমনটাই হয় সচারাচর। জগতের সব বিখ্যাত মানুষের আত্মজীবনী কিংবা স্মৃতিকথা তো আমি এই করেছি, এমন ছিল আমার দিনরাত্রিরই বয়ান। এই ‘আমি’ বাইরে দাঁড়িয়ে কি নিজেকে প্রকাশ করা যায়? তুমি ভেবে দেখো, নিজের কথা অন্যের মতো করে বলতে পারার একটা বৈপরীত্য আছে, ক‚টাভাষও আছে। কিন্তু এই সব কিছুর চেয়ে বেশি করে নিজের কথা অন্যের নামে বলার মধ্যে তুমি একটা জটিল লেখন প্রক্রিয়া দেখতে পারো। মানে পুরো ব্যাপারটা সৃষ্টিশীল স্মৃতিচারণে রূপ নিতে পারে।
‘আমি ছেলেবেলায় যে স্কুলে পড়তাম সেটা আমার বাড়ি থেকে বেশ দূরে’ বাক্যটিকে যখন তুমি তৃতীয় পুরুষে লিখছ ‘সে ছেলেবেলায় যে স্কুলে পড়ত সেটা তার বাড়ি থেকে বেশ দূরে’- তখন তোমাকেই যেন তুমি দেখছ একটু দূর থেকে। এই দেখাটার মধ্যে স্মৃতিকাতরতার পাশাপাশি একটা নির্মোহ কী থাকে? নাকি নিজেকে এই অন্য আরেকজনের নামে প্রকাশ করার মধ্যে গল্পের টানটোন থাকে? এইসব প্রশ্নই তোমার মনে আসবে, মানে প্রাসঙ্গিকভাবেই মনে আসতে বাধ্য ‘অতসীর স্কুল’ বইটি পড়তে বসলে।
বইটির সরল নামকরণ থেকেই তুমি বুঝতে পারছ যে, মিলু শামস ‘অতসীর স্কুল’ নামের যে বইটি লিখেছেন সেটি অতসী বলে একটি মেয়ের স্কুলজীবন। মোচড়টা এখানেই দারুণ যে, এই অতসী আদতে স্বয়ং মিলু শামস। মূলত তিনি নিজের স্কুলজীবন আর শৈশবকে বর্ণনা করছেন ‘অতসী’র বয়ানে। কিন্তু শুধু মামাবাড়ি, স্কুল, আম-কাঁঠালের ছায়া, দেবদাম, কিরিটি রায় ছাড়িয়ে অতসী একসময় চলে যায় সোজা নোবেল পুরস্কারের দেশে। ফলে শেষের দিকে এসে তুমি দেখতে পাবে সেই মুলাদী, গৌরনদী, হরিসোনাপুর পার হয়ে অতসী হাজির সুইডেনের গোথেনবার্গ বই উৎসবে। ছোট্ট অতসী এখন পরিণত হয়ে নোবেল মিউজিয়ামে অনুভব করছেন বড় বড় বিজ্ঞানী, লেখকদের হৃৎস্পন্দন। আর সেই হৃৎস্পন্দনের সঙ্গী হয়ে যাবে তুমি, কারণ তুমি পড়তে পড়তে একটা গল্পের ভুবনে চলে যাবে। সত্য, স্মৃতি আর জীবনকথা তোমাকে টেনে নিয়ে যাবে ‘অতসী’ নামের বালিকার দিকে। তোমার হয়তো তখন ‘এলিস’ কিংবা ‘আনা ফ্রাঙ্ক’কে মনে পড়বে। কিন্তু তুমি আরো দূরে এগিয়ে যাবে। কারণ অতসী তোমাকে অনেকটা পথ হাঁটাতে চায়। মিলু শামস অতসীকে তৈরি করেছেন তোমার সঙ্গী করতেই।
নিজেকে ‘অতসী’ চরিত্রে পরিণত করার মুনশিয়ানার সাথে এই বইখানিতে তোমার প্রাপ্তি হবে, ছোট ছোট বাক্য গঠন, ছোট ছোট অধ্যায়। এই সব ছোট ছোট বিন্যাস ধরে তুমি এগোতে থাকবে স্মৃতি-সত্তার দারুণ এক ভ্রমণে। ‘স্মৃতির প্রত্যুষ’, ‘সুগন্ধ ছুঁয়ে যায়’, ‘বিষণ্ণ গন্ধরাজ’, ‘দু’পয়সার আনন্দ’, ‘হিমায়িত ঘুমের রাত’-
ইত্যকার উপশিরোনামগুলো তোমাকে নিয়ে যাবে তোমার শৈশবেও। আর তোমারও মনে চাইবে একদিন ‘নোবেলের শহর’-এ পরিভ্রমণ করতে।
তবে পাঠক বন্ধু আমার, এসো, ‘অতসী’র হাত ধরো। স্মৃতি আর শৈশবের গন্ধ নিয়ে এগোতে শুরু করো দূর বিশ্বের পানে।
শুভেচ্ছা